সম্পদ কাকে বলে?

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আজকে আমরা তোমাদের মাঝে হাজির হলাম নতুন একটি টপিক সম্পর্কে যার নাম হল সম্পদ। আমরা কম-বেশি অনেক সম্পদই জানি যেগুলো আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক কাজে লাগে। সুতরাং জেনে নেওয়া যাক সম্পদ কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি? নিচে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

সম্পদ কাকে বলে

সাধারণ মানুষের কাছে সম্পদ বলতে টাকা-পয়সা ও ধনসম্পত্তি বোঝায়। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা সম্পদের সংজ্ঞা আরও বিস্তৃত করে ব্যাখ্যা করেন।

সহজ ভাবে বলতে গেলে,অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে, সম্পদ হলো সেইসব দ্রব্যসামগ্রী যার উপযোগ আছে, যোগান সীমাবদ্ধ এবং মানুষ তৈরি করে ও বিক্রয়যোগ্য।

সম্পদের বৈশিষ্ট্য

সম্পদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা এটিকে অন্যান্য জিনিস থেকে আলাদা করে তোলে। যেমন:

উপযোগিতা: সম্পদের প্রথম ও প্রধান বৈশিষ্ট্য হল উপযোগিতা। এর মানে হল, সম্পদ মানুষের চাহিদা পূরণে ব্যবহার করা যেতে পারে।

সীমাবদ্ধতা: সম্পদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল সীমাবদ্ধতা। এর মানে হল, মানুষের চাহিদার তুলনায় সম্পদের পরিমাণ কম।

বিনিময়যোগ্যতা: সম্পদের তৃতীয় বৈশিষ্ট্য হল বিনিময়যোগ্যতা। এর মানে হল, একটি সম্পদ অন্য সম্পদের সাথে বিনিময় করা যেতে পারে।

স্থায়িত্ব: সম্পদের চতুর্থ বৈশিষ্ট্য হল স্থায়িত্ব। যেকোনো সম্পদের স্থায়িত্ব থাকা খুবই জরুরী কারণ এতে সম্পত্তির মূল্য বৃদ্ধি পায় এবং সম্পত্তির স্থায়িত্ব বজায় থাকে সুতরাং স্থায়িত্ব দুই প্রকার

স্থায়িত্ব দুটি প্রকার হতে পারে:

  • দীর্ঘস্থায়ী সম্পদ: যেমন, জমি, খনিজ সম্পদ ইত্যাদি।
  • অস্থায়ী সম্পদ: যেমন, খাদ্য, পোশাক ইত্যাদি।

মূল্য: মূল্য দুটি প্রকার হতে পারে,

  • বাজার মূল্য: যা বাজারে কেনা-বেচার মাধ্যমে নির্ধারিত হয়।
  • ব্যবহারকারীর মূল্য: যা ব্যবহারকারীর কাছে সম্পদের গুরুত্বের উপর নির্ভর করে।

মালিকানা: সম্পদের ষষ্ঠ বৈশিষ্ট্য হল মালিকানা।

মালিকানা দুটি প্রকার হতে পারে,

  • ব্যক্তিগত মালিকানা: যেমন: ব্যক্তিগত সম্পত্তি।
  • সাধারণ মালিকানা: যেমন: সরকারি সম্পত্তি।

সম্পদের প্রকারভেদ

সম্পদ কে উৎস, বিকাশের পর্যায়, নবায়নযোগ্যতা এবং মালিকানা অনুযায়ী বিভিন্নভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যেমন:

উৎস অনুযায়ী

প্রাকৃতিক সম্পদ: সেসব সম্পদ যা প্রকৃতিতে স্বাভাবিকভাবেই পাওয়া যায়। যেমন: খনিজ সম্পদ, জল সম্পদ, বন সম্পদ, জীব সম্পদ ইত্যাদি।
মানুষের তৈরি সম্পদ: মানুষের পরিশ্রম ও বুদ্ধি দিয়ে তৈরি জিনিস। যেমন: শিল্প প্রতিষ্ঠান, সড়ক-ঘাট, রেলপথ, বিমানবন্দর, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ভবন, স্কুল, হাসপাতাল, জ্ঞান-বিজ্ঞান ইত্যাদি।

বিকাশের পর্যায় অনুযায়ী

উন্নত সম্পদ:যা ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত। যেমন: খনিজ সম্পদ উত্তোলন করা হয়েছে, বন উজাড় করা হয়েছে, জমি চাষ করা হয়েছে ইত্যাদি।
অনুন্নত সম্পদ: যা ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত নয়। যেমন: খনিজ সম্পদ আবিষ্কার করা হয়নি, বন ঘন, জমি অনাবাদী ইত্যাদি।

নবায়নযোগ্যতা অনুযায়ী

নবায়নযোগ্য সম্পদ: যা ব্যবহারের পর পুনরায় বা আবারও তৈরি করা যায়। যেমন: সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জলবিদ্যুৎ, জীব সম্পদ ইত্যাদি।
অ-নবায়নযোগ্য সম্পদ: যা ব্যবহারের পর পুনরায় তৈরি করা যায় না। যেমন: খনিজ সম্পদ, জীবাশ্ম জ্বালানি ইত্যাদি।

মালিকানা অনুযায়ী

ব্যক্তিগত সম্পদ: যার মালিকানা একজন বা একাধিক ব্যক্তির। যেমন: ব্যক্তিগত বাড়ি, গাড়ি, জমি ইত্যাদি।
সাধারণ সম্পদ: যার মালিকানা সকলের। যেমন: পার্ক, নদী, সমুদ্র, রাস্তাঘাট ইত্যাদি।
সরকারি সম্পদ: যার মালিকানা সরকারের। যেমন: স্কুল, হাসপাতাল, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রেলপথ ইত্যাদি।

পরিশেষে বলা যায়,সম্পদের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা আমাদের অর্থনীতির উন্নয়ন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং সমাজের সকলের জন্য একটি উন্নত জীবনযাত্রা নিশ্চিত করতে পারি। আশা করি উপরে তথ্য বলি আপনাদের যে কোন কাজে উপকারিতা করবে। সুতরাং সম্পদ সম্পর্কে আরো কোন তথ্য জানতে চাইলে নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে আমাদেরকে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ

 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *