জলবায়ু কাকে বলে
আজকে আমরা জানতে চলেছি পৃথিবীর মধ্যে ঘটে যাওয়া একটি উপাদান জলবায়ু সম্পর্কে তো চলুন জেনে নেওয়া যাক জলবায়ু কাকে বলে ও জলবায়ুর উপাদান সমূহ তাই জলবায়ু কাকে বলে এই সম্পর্কে নিচে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো
জলবায়ু কাকে বলে
জলবায়ু বলতে কোন নির্দিষ্ট স্থানের দীর্ঘ সময়ের, সাধারণত ৩০-৩৫ বছরের, আবহাওয়ার গড় বা সামগ্রিক অবস্থাকে বোঝায়। এটি একটি বৃহৎ এলাকাজুড়ে প্রযোজ্য। একটি স্থানের আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সম্পৃক্ত থাকে ওই স্থানের তাপমাত্রা, আদ্রতা, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ। আর কোন স্থানের আবহাওয়ার উপাদান গুলোর স্থায়ী পরিবর্তন হলো জলবায়ু পরিবর্তন। একটি স্থানের জলবায়ু হঠাৎ করে কখনোই পরিবর্তন হয় না। জলবায়ু পরিবর্তন হতে সময় লাগে এবং এটি একটি ধীর ও চলমান প্রক্রিয়া মত কাজ করে। বাংলাদেশের জলবায়ু মোটামুটি উষ্ণ আদ্র হয়ে থাকে
জলবায়ুর নির্ধারণে উপাদান
- তাপমাত্রা: কোন স্থানের গড় তাপমাত্রা জলবায়ু নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।সূর্য হচ্ছে তাপের প্রধান উৎস। বায়ুর উষ্ণতম বা শীতলতম অবস্থাকে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বলে। এই তাপমাত্রার পরিমানের উপর কোন স্থানের জরবায়ু অনেকাংশে নির্ভর করে।
- বৃষ্টিপাত: কোন স্থানের গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ জলবায়ু নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কোন স্থানে বৃষ্টিপাত হলে সেখানে উত্তাপ কমে আবার কোথাও বৃষ্টিপাত না হলে সেসব অঞ্চলে উষ্ণতা অনেক বেশি থাকে। তাই মরুভূমি এলাকাকে জলবায়ু উষ্ণ এলাকা বলা হয়।
- আর্দ্রতা: বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণকে আর্দ্রতা বলে। কোন স্থানের গড় আর্দ্রতা জলবায়ু নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- বায়ুচাপ: কোন স্থানের গড় বায়ুচাপ জলবায়ু নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।বায়ু প্রবাহ আবহাওয়া ও জলবায়ুকে প্রভাবিত করে। সমুদ্র থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু যখন কোন দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন সেই অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয় এবং তাপমাত্রা হ্রাস পায়।
- সূর্যালোক: কোন স্থানে সূর্যালোকের প্রাপ্যতা জলবায়ু নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বাতাস: কোন স্থানের বাতাসের গতি ও দিক জলবায়ু নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
জলবায়ুর শ্রেণীবিভাগ
জলবায়ু বিভিন্ন ধরনের হতে পারে যেমন:
- উষ্ণমণ্ডলীয় জলবায়ু
- শুষ্ক জলবায়ু
- সমশীতোষ্ণ জলবায়ু
- ধ্রুবীয় জলবায়ু
উষ্ণমণ্ডলীয় জলবায়ু
এই জলবায়ুতে গড় তাপমাত্রা বেশি থাকে এবং বৃষ্টিপাতের পরিমাণও বেশি থাকে। উষ্ণমণ্ডলীয় জলবায়ু হলো পৃথিবীতে এমন একটি বায়ুমণ্ডল, যেখানে প্রায়শই বৃষ্টি, উঁচু তাপমাত্রা, এবং উঁচু আর্দ্রতা বৃদ্ধি পায়। এই অঞ্চলে সাধারণত চা, কফি, কাপড় ইত্যাদি উদ্ভিদ উৎপাদিত হয় যেখানে উষ্ণতা এবং আর্দ্রতা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই ধরনের জলবায়ুতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক জীবজন্তু, উদ্ভিদ, এবং প্রাণী অত্যন্ত সুখী হতে পারে কারণ, এই অঞ্চলের অবস্থা এতটাই সহজে সাধারণ তাপমাত্রা এবং পার্শ্ববর্তী জলস্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য স্থাপন করতে সক্ষম। উষ্ণমণ্ডলীয় জলবায়ুর উদাহরণ হল মধ্যপ্রাচ্যের ভারত, ব্রাজিল, ও আফ্রিকার বিশেষ অঞ্চল।
শুষ্ক জলবায়ু
এই জলবায়ুতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুব কম থাকে। শুষ্ক জলবায়ু হলো এমন একটি বায়ুমণ্ডল যেখানে প্রায়শই বৃষ্টির পরিমাণ অত্যন্ত কম এবং হালকা হাওয়া বা একটি নির্দিষ্ট মঞ্চলের শক্তিশালী হাওয়ার অভাব থাকে। এই প্রকার জলবায়ুতে সাধারণত আলোকবর্ষ অত্যন্ত বেড়ে এবং তাপমাত্রা অত্যন্ত উঁচু হয়ে থাকে। এই অঞ্চলে প্রাণী জীবজন্তু অত্যন্ত প্রতিবন্ধী হতে পারে কারণ তারা পর্যবেক্ষণ এবং অনুশীলনের জন্য অত্যন্ত সক্ষম থাকতে হয়। উদাহরণ হিসেবে সাহারা মারুভূমির প্রায়ই শুষ্ক জলবায়ুর পরিবেশ উল্লেখ যুক্তি। এই অঞ্চলে তাপমাত্রা অত্যন্ত উঁচু এবং বৃষ্টি অত্যন্ত কম। এছাড়াও, শুষ্ক জলবায়ুর অন্যান্য উদাহরণ হতে পারে ক্যালিফোর্নিয়ার মধ্যমের মারুভূমি, আরব মহাদেশ, এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রায়শই শুষ্ক অঞ্চল।
সমশীতোষ্ণ জলবায়ু
এই জলবায়ুতে গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা বেশি এবং শীতকালে তাপমাত্রা কম থাকে। সমশীতোষ্ণ জলবায়ু হলো এমন একটি বায়ুমণ্ডল যেখানে প্রায়ই শীতকাল এবং গরমকালের মধ্যম তাপমাত্রা ও বৃষ্টির পরিমাণ পাওয়া যায়। এই প্রকার জলবায়ুতে চতুর্মুখী বৃষ্টিপাত পাওয়া যায় এবং বৃষ্টিপাতের সময়ে সাধারণত পর্যাপ্ত তাপমাত্রা থাকে। এই ধরনের জলবায়ুতে প্রাণী জীবজন্তুরা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হতে পারে কারণ প্রতিবন্ধী বন্ধনের অভাব থাকতে পারে।
ধ্রুবীয় জলবায়ু
এই জলবায়ুতে তাপমাত্রা সারা বছরই কম থাকে। ধ্রুবীয় জলবায়ু, অনেকটা শীতমণ্ডলীয় জলবায়ুর একটি ধরণ। এই জলবায়ুতে সাধারণত মহাসাগর ও পর্বত এলাকার জলবায়ুর মতো তাপমাত্রা ও বৃষ্টি পাওয়া যায় বা হয়ে থাকে। এই অঞ্চলের বৃদ্ধি সম্পর্কে বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি আছে কারণ এটি পৃথিবীর দুই ধ্রুব বিন্দু উপর এবং নীচে অবস্থান করে।
সর্বশেষে বলা যায়, জলবায়ু পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মানুষের কর্মকাণ্ডের ফলে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন বন্যা, খরা, ঝড়, ইত্যাদি বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সকলকেই সচেতন হতে হবে।