ব্যবস্থাপনা কাকে বলে ও ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝায় ?

আজকে আমরা জানতে চলেছি ব্যবস্থাপনা কি ও ব্যবস্থাপনা কাকে বলে এই সম্পর্কে ব্যবস্থাপনা মূলত একটি একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোন কাজকে খুব সহজেই একসাথে গোছানো যায় তাই এই  ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো:

ব্যবস্থাপনা কি

ব্যবস্থাপনা হল সংগঠিত কার্যকলাপের একটি প্রক্রিয়া যা লক্ষ্য অর্জনের জন্য সংস্থানগুলিকে কার্যকর এবং দক্ষতার সাথে ব্যবহার করে।”ব্যবস্থাপনা” শব্দটি ইংরেজি “Management” শব্দের সমার্থক। “Management” শব্দটি ইতালীয় বা ল্যাটিন “Maneggiare” শব্দ থেকে এসেছে। “Maneggiare” শব্দের অর্থ “অশ্বকে প্রশিক্ষিত করে তোলা”। “Management” শব্দের সমার্থক শব্দ হলো “to handle” বা “চালনা করা”।

Management বা ব্যবস্থাপনা কাকে বলে

ব্যবস্থাপনা হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য মানুষের প্রচেষ্টার সমন্বয় করা হয়। ব্যবস্থাপনা মানুষের, অর্থের, তথ্যের, এবং প্রযুক্তির মতো সংস্থানগুলির ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যগুলি অর্জনের জন্য একটি পরিকল্পিত এবং সংগঠিত পদ্ধতি।

ব্যবস্থাপনা কাকে বলে

আরো সহজ ভাবে বলতে গেলে,ব্যবস্থাপনা হলো একটি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য তার সম্পদসমূহকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়াটিতে পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয়সাধন ও নিয়ন্ত্রণের মতো কার্যাবলি অন্তর্ভুক্ত

বিভিন্ন মনীষীগণ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন ভাবে সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে তাদের সংজ্ঞা প্রদান করা হলো:

হেনরি ফেওল এর মতে, “ ব্যবস্থাপনা হচ্ছে পূর্বানুমান, পরিকল্পনা, সংগঠন, নির্দেশনা, সমন্বয়সাধন ও নিয়ন্ত্রণের সমষ্টি”

ব্রেকের (Breck) মতে, “Management is | concerned with seeing that the job gets done”. অর্থাৎ দক্ষতার সঙ্গে কাজটি সম্পাদিত হয়েছে কিনা তা যাচাই করা হলাে ব্যবস্থাপনার কাজ।

নিউম্যানের মতে, “ব্যবস্থাপনা হচ্ছে এমন একটি কার্যক্রম যা প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত নীতিমালা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্য সম্পাদন করে।”

ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য

ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে ,

  • মুখ্য উদ্দেশ্য
  • গৌণ উদ্দেশ্য

মুখ্য উদ্দেশ্য:

  • মুনাফা অর্জন
  • মালিকের কল্যাণ
  • কর্মীদের কল্যাণ
  • অস্তিত্ব রক্ষা

গৌণ উদ্দেশ্য:

  • উপকরনাদির উন্নয়ন
  • সম্পর্কোন্নয়ন
  • উত্‍পাদনশীলতা বৃদ্ধি
  • নীতিমালা প্রনয়ন
  • উত্‍পাদন
  • মানোন্নয়ন
  • উদ্ভাবন
  • কর্মী পরিচালনা
  • সামাজিক দায়িত্ব পালন
  • বাজার সম্প্রসারণ
  • সুস্থ কার্যপরিবেশ সৃষ্টি

ব্যবস্থাপনার বৈশিষ্ট্য

ব্যবস্থাপনা হলো একটি জটিল এবং বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া। এটি একটি বিজ্ঞান, কলা এবং প্রক্রিয়া। ব্যবস্থাপনার বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ দেওয়া হল

  • লক্ষ্য-ভিত্তিকতা (Goal-oriented)ঃ ব্যবস্থাপনা একটি লক্ষ্য-ভিত্তিক প্রক্রিয়া। ব্যবস্থাপনার মূল উদ্দেশ্য হলো প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জন করা। ব্যবস্থাপনার সকল কার্যাবলী এই একেই লক্ষ্য অর্জনের দিকে পরিচালিত হয়।
  • সামাজিক প্রক্রিয়া (Social Process)ঃ ব্যবস্থাপনা হল একটি সামাজিক প্রক্রিয়া। ব্যবস্থাপনা মানুষের মধ্যেকার সম্পর্ককে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ব্যবস্থাপক ও কর্মচারীদের মধ্যে সম্পর্ক, ব্যবস্থাপক ও গ্রাহকের মধ্যে সম্পর্ক, ব্যবস্থাপক ও সরবরাহকারীর মধ্যেকার সম্পর্ক ইত্যাদি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়।
  • সর্বজনীনতা (Universality):ঃ ব্যবস্থাপনা একটি সর্বজনীন প্রক্রিয়া। যেকোনো ধরনের সংগঠনে ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন হয়। পরিবার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক সংস্থা ইত্যাদি সকল ধরনের সংগঠনে ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন হয়।
    প্রক্রিয়া (Process): ব্যবস্থাপনা একটি প্রক্রিয়া। ব্যবস্থাপনা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন কার্যাবলী পরস্পর সম্পর্কযুক্ত এবং এগুলি একই সাথে সম্পন্ন হয়।
  • শৃঙ্খলা (Order)ঃ ব্যবস্থাপনা একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ প্রক্রিয়া। ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন কার্যাবলী সুনির্দিষ্ট নিয়ম ও নীতির অধীনে সম্পন্ন হয়।
  • পরিবর্তনশীলতা (Changeability)ঃ ব্যবস্থাপনা একটি পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়া। পরিবেশের পরিবর্তনের সাথে সাথে ব্যবস্থাপনার কৌশল ও পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন হয়।

ব্যবস্থাপনার উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলি ব্যবস্থাপনাকে একটি স্বতন্ত্র ও গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া হিসেবে চিহ্নিত করে।

Similar Posts

2 Comments

    1. ধন্যবাদ আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে banglaquestion.com এর সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *