পরিসংখ্যান কাকে বলে ?কত প্রকার ও কি কি?

আজকে আমরা শিখতে চলেছি গাণিতিক তথ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পরিসংখ্যান সম্পর্কে। এটি গাণিতিক তত্ত্বের একটি অন্যতম ভান্ডার হিসেবে কাজ করে, তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক পরিসংখ্যান কাকে বলে ?কত প্রকার ও কি কি ?এ সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

পরিসংখ্যান কাকে বলে (Statistics)

পরিসংখ্যান হলো উপাত্ত সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, ব্যাখ্যা এবং উপাত্ত সহজে পরিবেশন নিয়ে কাজ করা এক ধরনের গাণিতিক বিজ্ঞান

সহজ ভাবে বলতে গেলে,

পরিসংখ্যানের মাধ্যমে আমরা নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে থাকি। এই তথ্যগুলো সংখ্যা আকারে থাকে। পরিসংখ্যানবিদরা এই সংখ্যাগুলো বিশ্লেষণ করে উপসংহার বের করেন। এই উপসংহারগুলো সহজে বোঝার জন্য গ্রাফ, চার্ট, টেবিল ইত্যাদি ব্যবহার করে প্রদর্শন করা হয়।

পরিসংখ্যানে উৎপত্তি

পরিসংখ্যান বা (Statistics) এর উৎপত্তি বিকাশ বহু যুগ আগে থেকে। মূলত পরিসংখ্যান (Statistics)শব্দটি “statisticum collegium” ল্যাটিন শব্দ থেকে এসেছে  তাছাড়াও পরিসংখ্যান শব্দটি ইতালীয় শব্দ “statista” এবং জার্মান শব্দ “statistik” থেকে উৎপন্ন। পরিসংখ্যানের শাখা“Statuss” এবং “Statistik” শব্দ দুটির অর্থ “রাষ্ট্র”“Statista” শব্দের অর্থ “রাষ্ট্রের কার্যাবলী”

এই তথ্য থেকে বোঝা যায় যে, পরিসংখ্যানের উৎপত্তি রাষ্ট্রের কাজ পরিচালনার সাথে সম্পর্কিতপ্রাচীনকালে রাষ্ট্রের বিভিন্ন তথ্য, যেমন লোকসংখ্যা, রাজস্বের পরিমাণ, জন্মমৃত্যু হার ইত্যাদি হিসাব করার জন্য পরিসংখ্যান ব্যবহার করা হত।

পরিসংখ্যানের শাখা

পরিসংখ্যানে সাধারণত ৭ টি শাখা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যথাঃ

  • গড়
  • মধ্যক
  • প্রচুরক
  • অজিব রেখা
  • গণসংখ্যা
  • বহুভুজ
  • আয়তলেখ

পরিসংখ্যানের বৈশিষ্ট্য

  • তথ্যের সমষ্টি: পরিসংখ্যান কেবলমাত্র একটি বা দুটি সংখ্যা নয়, বরং সংখ্যার সমষ্টি। এই সংখ্যাগুলো একই ধরণের হতে হবে এবং একই উদ্দেশ্যে সংগ্রহ করা হতে হবে।
  • সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ: পরিসংখ্যান গুণগত তথ্য নয়, বরং সংখ্যাগত তথ্য।
  • পূর্বনির্ধারিত উদ্দেশ্য: পরিসংখ্যান উদ্দেশ্যহীনভাবে সংগ্রহ করা হয় না। বরং, কোন নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য পূরণের জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
  • বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা: পরিসংখ্যান কেবলমাত্র তথ্য সংগ্রহ করেই থাকে না, বরং তথ্য বিশ্লেষণ করে উপসংহার বের করে এবং ব্যাখ্যা করে।
  • ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা: পরিসংখ্যান নিশ্চিত জ্ঞান প্রদান করে না, বরং সম্ভাব্যতা সম্পর্কে ধারণা দেয়।
  •  সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা: পরিসংখ্যান তথ্য-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে।
  • বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য: পরিসংখ্যান বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ব্যবসা, সরকার, সমাজ ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
  • ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব: তথ্য প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পরিসংখ্যানের গুরুত্ব

আধুনিক বিশ্বে, তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আমাদের তথ্য বিশ্লেষণ করতে হবে। আর তথ্য বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান একটি অপরিহার্য হাতিয়ার।

পরিসংখ্যান গুরুত্বপূর্ণ কারণ:

তথ্য বোঝার সহজ উপায়: পরিসংখ্যান সংখ্যাগুলোকে সহজে বোঝার জন্য গ্রাফ, চার্ট, টেবিল ইত্যাদি ব্যবহার করে।
অনিশ্চয়তা কমানো: পরিসংখ্যানের মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারি এবং ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে পারি।
সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা: পরিসংখ্যানের মাধ্যমে আমরা তথ্য-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি।
কার্যকারিতা বৃদ্ধি: পরিসংখ্যানের মাধ্যমে আমরা প্রক্রিয়াগুলোকে আরও কার্যকর করে তুলতে পারি।
নতুন জ্ঞান অর্জন: পরিসংখ্যানের মাধ্যমে আমরা বিশ্ব সম্পর্কে নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পারি।
পরিসংখ্যান বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যেমন:

বিজ্ঞান: পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ, জীববৈচিত্র্য পর্যবেক্ষণ, ঔষধের কার্যকারিতা মূল্যায়ন ইত্যাদি।
ব্যবসা: বাজার গবেষণা, বিক্রয় পূর্বাভাস, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি।
সরকার: জনসংখ্যা পরিসংখ্যান, অপরাধের হার বিশ্লেষণ, শিক্ষা ব্যবস্থার মূল্যায়ন ইত্যাদি।
সামাজিক বিজ্ঞান: জনমত জরিপ, ফলাফল বিশ্লেষণ, সামাজিক সমস্যা সম্পর্কে গবেষণা ইত্যাদি

পরিসংখ্যানের কার্যক্ষেত্র

পরিসংখ্যানের বিভিন্ন রকম কাজে ব্যবহার করা হয়, তার মধ্যে কিছু লিখেযোগ্য কাজ নিম্ন তুলে ধরা হলো। পরিসংখ্যান মূলত বিভিন্ন কলা কৌশলের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সামাজিক ও রাজনৈতিক কাজে জন্য ব্যবহৃত করা হয়।

  • রাষ্ট্রীয় কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে
  • মানবকল্যাণ পরিসংখ্যান
  • ব্যবসা-বাণিজ্য
  • অর্থনৈতিক গবেষণা
  • রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের ক্ষেত্রে
  • পূর্বাভাস প্রদান
  • রাজনৈতিক গবেষণা
  • অতীত অভিজ্ঞতা সংরক্ষণে সামাজিক গবেষণা
  • জাতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ ও মূল্যায়ন
  • বিভিন্ন নীতিমালা নির্ধারণে রাষ্ট্রের আইন প্রণয়নে
  • জনগণের অধিকার রক্ষার্থে
  • শিক্ষিকার যে
  • রেমিটেন্স নির্ধারণে
  • বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার ক্ষেত্রে
  • প্রতিষ্ঠানিক কার্যকলাপে

পরিশেষে বলা যায়, পরিসংখ্যান কাজ মূলত তথ্য সংগ্রহ, গবেষণা, সংরক্ষণ, সারণির মাধ্যমে তা বহিঃপ্রকাশ করায় মূলত পরিসংখ্যানের কাজ। পরিসংখ্যান সম্পর্কে আরো কোন তথ্য জানতে হলে নিচে কমেন্ট করে আমাদেরকে জানাতে পারেন ধন্যবাদ

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *