উপাত্ত কাকে বলে

আসসালামু আলাইকুম, আজকে আমরা গাণিতিক পরিসংখ্যান বিষয়ের নতুন একটি টপিক নিয়ে আলোচনা করব যেটা হল উপাত্ত। যেটা গাণিতিক বিষয়ের সাথে খুবই ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক উপাত্ত কাকে বলে, এ নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলোঃ

উপাত্ত কাকে বলে

উপাত্ত বলতে বোঝায় এমন কিছু তথ্যকে যা নির্দিষ্ট কোনো চলকের বা এক সেট চলকের গুণগত ও পরিমাণ গত ধর্মাবলিকে প্রকাশ করে।

অন্যভাবে বলতে গেলে, একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের নির্দিষ্ট সংখ্যাবাচক এর পরিমাপকে উপাত্ত বলে যেমনঃ

  • ১০ম শ্রেণীর ৫ জন ছাত্রের বয়স  হলো ১৪ বছর, ১৫ বছর ,১৬ বছর, ১৭বছর ,১৭বছর  ৪ মাস। এই তথ্যগুলো হলো উপাত্ত কারণ এগুলো গণনা করা যায়।
  • ২ জন শিক্ষার্থী রাতুল এবং হাসিব ; হাসিব রাতুলের চেয়ে দ্রুত দৌড়াতে পারে = এটি কোন উপাত্ত নয় কারণ এই তথ্যগুলো নির্দেশ করতে পারলেও গুনকে ও পরিমাপকে নির্দেশ করতে ব্যর্থ।

উপাত্তের প্রকারভেদ

তথ্য সংগ্রহের উৎস ভিত্তিতে উপাত্ত ২ ধরনের যথাঃ

  • প্রাথমিক বা প্রত্যক্ষ উপাত্ত
  • মাধ্যমিক বা পরোক্ষ উপাত্ত

প্রাথমিক বা প্রত্যক্ষ উপাত্ত

সরাসরি উৎস থেকে সংগ্রহ করা তথ্যকে প্রাথমিক উপাত্ত বলা হয়। এই ধরনের তথ্য ব্যবহার করে গবেষণা বা পরিসংখ্যানের ফলাফল বেশি নির্ভরযোগ্য হয় কারণ এতে পক্ষপাত বা ভুলের সম্ভাবনা কম থাকে।

যেমনঃ  বার্ষিক পরীক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের ফলাফল এর উপাত্ত

মাধ্যমিক বা পরোক্ষ উপাত্ত

যখন সরাসরি উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব না হয়, তখন পরোক্ষভাবে সংগ্রহ করা তথ্য ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের তথ্যকে মাধ্যমিক বা পরোক্ষ উপাত্ত বলা হয়। পরিসংখ্যান বা গবেষণায় মাধ্যমিক উপাত্ত ব্যবহার করলে ফলাফলের নির্ভরযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা কমে যেতে পারে।

যেমনঃ বিশ্বের বিভিন্ন শহরের তাপমাত্রা বা বৃষ্টিপাত সংশ্লিষ্ট উপাত্ত

তথ্যের বিন্যাসের উপর ভিত্তি করে উপাত্ত

তথ্যের বিন্যাসের উপর ভিত্তি করে উপাত্ত ২ ধরনের যথাঃ

  • বিন্যস্ত উপাত্ত
  • অবিন্যস্ত উপাত্ত

বিন্যস্ত উপাত্ত

সংগৃহীত তথ্যকে নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসারে সাজানো হলে তাকে বিন্যস্ত উপাত্ত বলে। এই তথ্যগুলি মান, অক্ষর, বা অন্য কোন বৈশিষ্ট্য অনুসারে ক্রমবর্ধমান বা হ্রাসক্রমে সাজানো যেতে পারে। বিন্যস্ত তথ্য ব্যবহার করা সহজ এবং ভুলের সম্ভাবনা কম থাকে।

যেমন: ৫ জন ছাত্র-ছাত্রীদের ওজন যথাক্রমে, ৪৯, ৫২, ৫৫, ৫৭, ৬৩ কেজি।

অবিন্যস্ত উপাত্ত

যখন সংগৃহীত তথ্যকে কোন নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসারে সাজানো সম্ভব হয় না, তখন সেই তথ্যকে অবিন্যস্ত উপাত্ত বলা হয়। এই তথ্যগুলি এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে থাকে এবং কোন নির্দিষ্ট ক্রম অনুসরণ করে না।

যেমনঃ ৫ জন শিক্ষার্থীদের ওজন যথাক্রমে, ৫২, ৫৭, ৫৫, ৬১, ৪৯ কেজি।

উপাত্তের বৈশিষ্ট্যের ভিত্তি

উপত্যের বৈশিষ্ট্যর ভিত্তি অনুযায়ী উপাত্তকে ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে যথাঃ

  • গুণবাচক উপাত্ত
  • পরিমাণবাচক উপাত্ত

গুণবাচক উপাত্ত

গুণবাচক উপাত্ত হল এমন তথ্য যা কোন বস্তু বা ঘটনার বর্ণনা, বৈশিষ্ট্য, বা অবস্থা সম্পর্কে ধারণা দেয়। এই ধরনের তথ্য সংখ্যার পরিবর্তে শব্দ, ছবি, বা অন্যান্য মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

যেমনঃ  মানব দেহে ওষুধ, টীকা বা ভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা।

পরিমাণবাচক উপাত্ত

পরিমাণবাচক উপাত্ত হল এমন তথ্য যা সংখ্যা, দৈর্ঘ্য, ওজন, বা অন্যান্য পরিমাপযোগ্য একক ব্যবহার করে কোন বস্তু বা ঘটনার পরিমাণ নির্দেশ করে। এই ধরনের তথ্য সংখ্যা, গ্রাফ, বা চার্টের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়।

যেমনঃ   জরিপ, মানুষের বয়স, আয়, নম্বর ইত্যাদি।

পরিশেষে বলা যায়, উপাত্ত হল এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ যা আমাদের চারপাশের বিশ্ব সম্পর্কে জানতে এবং সু-সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সাহায্য করে। উপাত্ত সম্পর্কে আরো কোন জানতে চাইলে নিচের কমেন্ট করে জানাতে পারেন ধন্যবাদ।

 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *