ত্রিভুজ কাকে বলে? কত প্রকার ও কী কী?
আজ আমরা জানতে পারবো জ্যামিতির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ত্রিভুজ, আমরা জানতে পারবো ত্রিভুজ কাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি উদাহরণসহ
ত্রিভুজ কাকে বলে
তিনটি বাহু দ্বারা আবদ্ধ ক্ষেত্রকে ত্রিভুজ বলে। অথবা তিনটি কোন দ্বারা আবদ্ধ ক্ষেত্রকে ত্রিভুজ বলে। ত্রিভুজের তিনটি বাহুকে ত্রিভুজের বাহুর নাম দেওয়া হয়। ত্রিভুজের তিনটি কোণকে ত্রিভুজের কোণের নাম দেওয়া হয়। ত্রিভুজের তিনটি শীর্ষবিন্দুকে ত্রিভুজের শীর্ষবিন্দু বলা হয়। ত্রিভুজের তিনটি কোণের সমষ্টি ১৮০ ডিগ্রি হয়।
ত্রিভুজের প্রকারভেদ
ত্রিভুজকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়
- বাহুর দৈর্ঘ্যের ভিত্তিতে
- কোণের ভিত্তিতে
বাহুর দৈর্ঘ্যের ভিত্তিতে
বাহুর দৈর্ঘ্যের ভিত্তিতে ত্রিভুজকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ
- সমবাহু ত্রিভুজ
- সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ
- বিষমবাহু ত্রিভুজ
সমবাহু ত্রিভুজ কাকে বলে
যে ত্রিভুজের তিনটি বাহু পরস্পর সমান তাকে সমবাহু ত্রিভুজ বলে। সমবাহু ত্রিভুজের তিনটি কোণ ও পরস্পর সমান। এর প্রত্যেকটি কোণের মান ৬০°। সমবাহু ত্রিভুজের তিনটি কোণের সমষ্টি ১৮০°।
সমবাহু ত্রিভুজের বৈশিষ্ট্যগুলি
- প্রতিটি বাহু সমান।
- প্রতিটি কোণ 60 ডিগ্রি।
- পরিসীমা = 3a
- ক্ষেত্রফল = (√3/4)a²
- তিনটি কোণের সমষ্টি ১৮০ ডিগ্রি।
সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ কাকে বলে
যে ত্রিভুজের দুইটি বাহু পরস্পর সমান তাকে সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ বলে। এছাড়াও সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের বিপরীত কোণ দুটি সমান। সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের কোন কোণ ৯০ ডিগ্রি হতে পারে না। এর তিনটি কোণের সমষ্টি ১৮০°। সকল সমবাহু ত্রিভুজকে সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ বলা হয় কারণ এর দুইটি বাহু পরস্পর সমান থাকে।
সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের বৈশিষ্ট্যগুলি
- দুটি বাহু সমান।
- বিপরীত কোণ দুটি সমান।
- পরিসীমা = (a + 2b)
- ক্ষেত্রফল = (1/2)bh
- তিনটি কোণের সমষ্টি ১৮০ ডিগ্রি।
বিষমবাহু ত্রিভুজ
ত্রিভুজের কোন বাহুই পরস্পর সমান নয় বা অসমান তাকে বিষমবাহু ত্রিভুজ বলে। বিষমবাহু ত্রিভুজের বাহুই আলাদা আলাদা পরিমাপের হয়ে থাকে এবং কোণ তিনটি ও অসমান। এর তিনটি কোণের সমষ্টি ১৮০°। বিষমবাহু ত্রিভুজকে প্রায়শই ইংরেজিতে “scalene triangle” বলা হয়।
বিষমবাহু ত্রিভুজের বৈশিষ্ট্যগুলি
- তিনটি বাহু অসমান।
- তিনটি কোণ অসমান।
- পরিসীমা = a + b + c
- তিনটি কোণের সমষ্টি ১৮০ ডিগ্রি।
- ক্ষেত্রফল = √(s(s-a)(s-b)(s-c)), যেখানে অর্ধ পরিসীমা, S= (a+b+c)/2
কোণের ভিত্তিতে
- সমকোণী ত্রিভুজ
- স্থূলকোণী ত্রিভুজ
- সূক্ষ্মকোণী ত্রিভুজ
সমকোণী ত্রিভুজ কাকে বলে
যদি কোন ত্রিভুজের একটি কোন সমকোণ হয় তাকে সমকোণী ত্রিভুজ বলে। অথবা, যে ত্রিভুজের একটি কোন ৯০ ডিগ্রী হয় তাকে সমকোণী ত্রিভুজ বলে। এক সমকোণ= 90 ডিগ্রী।
সমকোণী ত্রিভুজের তিনটি বাহুর নাম হলো অতিভুজ, লম্ব এবং ভূমি। অতিভুজ হলো সমকোণী ত্রিভুজের বৃহত্তম বাহু এবং এটি সমকোণের বিপরীত দিকে অবস্থিত। লম্ব হলো সমকোণের বিপরীত দিকে অবস্থিত বাহু। ভূমি হলো সমকোণের সংলগ্ন দিকে অবস্থিত বাহু।
সমকোণী ত্রিভুজের বৈশিষ্ট্যগুলি
- এই ত্রিভুজের একটি কোণ 90 ডিগ্রি হবে।
- এই ত্রিভুজের সমকোণ ছাড়া অবশিষ্ট দুইটি কোণের প্রত্যেকটি কোণই এক একটি সূক্ষ্মকোণ হবে।
- সমকোণী ত্রিভুজের সমকোণ ছাড়া সূক্ষ্মকোণ দুইটির সমষ্টি অবশ্যই 90° হবে।
- পরিসীমা = a + b + c
- ক্ষেত্রফল = (1/2) * লম্ব * ভূমি
স্থূলকোণী ত্রিভুজ কাকে বলে
যদি কোন ত্রিভুজের একটি কোণ স্থূলকোণ হয় তাকে স্থূলকোণী ত্রিভুজ বলে। অথবা, যে ত্রিভুজের একটি কোণের পরিমাণ 90 ডিগ্রি থেকে বড় কিন্তু ১৮০ ডিগ্রি থেকে ছোট তাকে স্থূলকোণী ত্রিভুজ বলে। অর্থাৎ, স্থূলকোণী ত্রিভুজের একটি কোণ 90°-এর বেশি এবং অন্য দুটি কোণ 90°-এর কম।
স্থূলকোণী ত্রিভুজের বৈশিষ্ট্যগুলি
- স্থূলকোণী ত্রিভুজের একটি কোণ 90°-এর বেশি হবে।
- স্থূলকোণী ত্রিভুজের সমস্ত কোণের সমষ্টি 180°-এর বেশি হবে।
- স্থূলকোণী ত্রিভুজের কোণগুলির সমষ্টির মধ্যে একটি কোণ 90°-এর বেশি হবে।
- পরিসীমা = a + b + c
- ক্ষেত্রফল = √(s(s-a)(s-b)(s-c))
সূক্ষ্মকোণী ত্রিভুজ কাকে বলে
যে ত্রিভুজের প্রতিটি কোণ সূক্ষ্মকোণ হয় তাকে সূক্ষ্মকোণী ত্রিভুজ বলে। অথবা, যে ত্রিভুজের তিনটি কোণই সূক্ষ্মকোণ (৯০° এর চেয়ে কম) সেই ত্রিভুজকে সূক্ষ্মকোণী ত্রিভুজ বলে। যে কোণের মাপ ৯০° এর চেয়ে কম তাকে সূক্ষ্মকোণ বলে।
সূক্ষ্মকোণী ত্রিভুজের বৈশিষ্ট্য
- সূক্ষ্মকোণী ত্রিভুজের তিনটি কোণের সমষ্টি 180°।
- সূক্ষ্মকোণী ত্রিভুজের তিনটি বাহু পরস্পরকে ছেদ করলে সৃষ্ট কোণগুলির সমষ্টি 180°।
- সূক্ষ্মকোণী ত্রিভুজের বাহুর দৈর্ঘ্য অনুপাতে ত্রিভুজের কোণগুলির মান অনুপাত থাকে।
- পরিসীমা = a + b + c
- ক্ষেত্রফল = √(s(s-a)(s-b)(s-c))
